তুরস্কের চেয়েও ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ
তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূমিকম্পকে সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে ভয়াবহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যার মাত্রা ছিল ৭.৮।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ওই এলাকার মাটির নিচের আরবীয় প্লেট উত্তর দিকে সরে এসে আনাতোলিয়ান প্লেটে আঘাত হানলে এই ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়।পৃথিবীর পৃষ্ঠটি পৃথক বিট বা টেকটোনিক প্লেট দ্বারা গঠিত যা নীচের নরম পদার্থের উপরে ভাসমান। সারা বিশ্বে এই ধরনের সাতটি বড় প্লেট এবং অসংখ্য ছোট সাব-প্লেট রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলছেন, উত্তরে তিব্বত সাব-প্লেট, ইন্ডিয়ান প্লেট এবং দক্ষিণে বার্মা সাব-প্লেটের সংযোগস্থলে বাংলাদেশের অবস্থান। ফলে সিলেট-সুনামগঞ্জ হয়ে, কিশোরগঞ্জ চট্টগ্রাম হয়ে একেবারে দক্ষিণ সুমাত্রা পর্যন্ত চলে গেছে।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দুই যুগ ধরে এ নিয়ে গবেষণা করেছে। সেখানে দেখা গেছে, ইন্ডিয়া প্লেট ও বার্মা প্লেটের সংযোগস্থলে দীর্ঘসময় ধরে কোন ভূমিকম্পের শক্তি বের হয়নি। ফলে সেখানে ৪০০ থেকে হাজার বছর ধরে শক্তি জমা হয়ে রয়েছে। ইন্ডিয়া প্লেট পূর্ব দিকে বার্মা প্লেটের নীচে তলিয়ে যাচ্ছে আর বার্মা প্লেট পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
ফলে সেখানে যে পরিমাণ শক্তি জমা হচ্ছে, তাতে আট মাত্রার অধিক ভূমিকম্প হতে পারে। বাংলাদেশে সর্বশেষ ১৮২২ এবং ১৯১৮ সালে মধুপুর ফল্টে বড় ভূমিকম্প হয়েছিল। ১৮৮৫ সালে ঢাকার কাছে মানিকগঞ্জে ৭.৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্পের ইতিহাস রয়েছে।বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ এবং অঞ্চল রয়েছে যেগুলি বড় প্লেট বা সাব প্লেটের চারপাশে অবস্থিত। বাংলাদেশ এমনই একটি দেশ।
বার্মা প্লেট এবং ইন্ডিয়া প্লেট বাংলাদেশের কাছাকাছি অবস্থিত। এসব প্লেটের অবস্থান পরিবর্তনের ফলে এ অঞ্চলে আট মাত্রার বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।