পহেলা বৈশাখ উদযাপন কেন
পহেলা বৈশাখ এর প্রবর্তক
মুঘল সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। সম্রাট আকবর সিংহাসন দখল বা আরোহনের সময় (৯৬৩ হিজরি) 'ফসলি সন' নামে যে সন প্রবর্তন করেন, তা পরে কালক্রমে 'বাংলা সন' নামে পরিচিতি লাভ করে ।
তখন হিজরি সনের ভিত্তিতে বাংলাদেশে দেশে বছর গণনা হতো । হিজরি বছর সৌর বছর থেকে ১১ দিন ছোট হওয়ায় কৃষির হিসাব-নিকাশ এলোমেলো হয়ে যেত। এতে কৃষকদের 'ফসলি সন' গণনায় সমস্যা তৈরি হয়। ফলে কৃষকের কাছ থেকে জমিদারের খাজনা আদায় করতেও সমস্যা দেখা দেয়। জমিদার ও কৃষকদের সুবিধার্থে, এ সমস্যা দূর করতে মূলত বাংলা সনের প্রবর্তন করা হয়। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ কৃষিপ্রধান দেশ। তাই বাংলা নববর্ষের উৎসবের আমেজটা কৃষকের একটু বেশিই থাকে।
বৈশাখের প্রথম সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শোভা যাত্রা শুরু হয়। বৈশাখী সাজে নানা বাহারি মুখোশ, শোলার পাখি, টেপা পুতুল হাতে হাতে নিয়ে ঢাক, ঢোল, বাঁশি বাজিয়ে হাজরো মানুষ অংশ নেন মঙ্গল শোভা যাত্রায়।
১৯৮৯সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের চারুকলা শিক্ষার্থীও শিক্ষকদের উদ্যোগে পহেলা বৈশাখে এ মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন শুরু হয়। ১৯৯১ সালে চারুকলার শোভাযাত্রা জন প্রিয়তায় নতুন মাত্রা লাভ করে। ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কো কর্তৃক "':বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য"' হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে এ সার্বজনীন শোভাযাত্রা।
ধর্ম, বর্ণ, জাতি, লিঙ্গ পরিচয় নির্বিশেষে সব পেশার, সব শ্রেণির মানুষ শামিল হন মঙ্গল শোভাযাত্রায়। পহেলা বৈশাখ উদযাপনে অংশ নিতে আসা নারীদের মাথায় শোভা পায় ফুল, মুখে মুখে আল্পনা, তরুণ-তরুণীদের হাতে পতাকাসহ বিভিন্ন আয়োজন আমাদের সকল ,দুঃখ-কষ্ট-বিষাদ কে ভুলিয়ে দেয়।
কবি গুরু রবি ঠাকুর এর সুরে সুর মিলিয়ে বলা যায় ====
এসো হে বৈশাখ এসো এসো
তাপস নিশ্বাস বায়ে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়েবৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক যাক যাক।