vfx এর মাধ্যমে মুভিকে বাস্তবে রূপ দেওয়া হয়
Vfx সম্পর্কে সম্যক ধারণা
Vfx এর সাংকেতিক নাম হলো Visual Effects। যার মাধ্যমে অবাস্তব কে বাস্তবে প্রকাশ করা আবার অন্য ভাবে বললে বলা যায় কম্পিউটার গ্রাফিক্স এর মাধ্যমে কোন কিছুকে তৈরি করে ভিউয়ার বা দর্শকের সামনে বা মনোরঞ্জনের জন্য ভিডিও, ছবি, মুভি ,ফিল্ম এর জন্য তৈরি করে তা উপস্থাপন করা।বর্তমানে টালিউড, বলিউড,হলিউড ইত্যাদি সব মুভিতেই এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।হলিউড ও বলিউডের প্রায় সাই-ফাই মুভিতেও দেখি এই ভিএফএক্স এর কারসাজি।
মুভিতে রোমান্টিকতা,ডিমান্ড বা দর্শকদের আকর্ষনের জন্য কিসিং সীন এড করতে হয়। অনেক নায়ক-নায়িকা আছেন যাঁরা ক্যামেরার সামনে শ্যুট করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন না। তাছাড়া ক্যামেরা ম্যান, ডাইরেক্টর, লাইটম্যান,।প্রযোজক,প্রডিউসার আরও অনেকে অবস্থান করেন। এত লোকের সামনে কিসিং সীন করা প্রথম প্রথম লজ্জাজনক মনে করেন।তাই হিরো বা নায়ক একটি গ্রীন বা সবুজ রঙের বলে রোমান্স টাইপে কিস করান হিরোইন বা নায়িকাকে ।
এরপর নায়ক বা হিরোকে দিয়ে একটি কাঁচের উপর কিস করানো হয়।এখন ভিএফেক্স এর মাধ্যমে এই দুটিকে সংযোগ করে হট কিসিং সীন বা রোমান্টিক সীন আদলে দর্শকদের সামনে উপাস্থাপন করা হয়।
এখন আসি বলিউডের জনপ্রিয় ছবি "কৃষ" এ। এখানে নায়ক হৃতিক রোশন একটি বিমানকে বাঁচানোর জন্য এক বিল্ডিং থেকে অন্য এক বিল্ডিং এ গিয়ে পড়েন ।ছবির শ্যুটিং এ জানা যায় কৃষ শুধু ৫ ফুট উচ্চতা থেকে লাফ দিয়েছেলেন। তাছাড়া এটি একটি মাঠের মধ্যে শ্যুটিং করা হয়েছিল।
এর পরের দৃশ্যে কৃষ একটি বিশাল জাম্প দিয়ে বিমানের চাকা ধরে ফেলেন। যেটা কিনা ছোট একটি ঘরের মধ্যে শ্যুট করা হয়েছিল।তাছাড়া উড্ডয়ন একট ই বিমানকে দেখানোটাও ছিল ভিএফএক্স একটি কেরামতি।
আবার,কৃষ ছবিতে মাঝ আকাশের একটি বিল্ডিং এ দাঁড়িয়েছিলেন যেটা কিনা একটি গ্রীন রুমের মধ্যে শ্যুট করা হয়েছিল। পরে কৃষকে ভিএফএক্স এডিটিং এর মাধ্যমে অনেক উঁচুতে দাঁড় করিয়ে দেয়া হয়েছিল।
দক্ষিণের ছবি "বাহুবলী" তেও ভিএফএক্স এর ব্যবহার ছিল নায়ক প্রভাস আর নায়িকা তামান্না ভাটিয়া যখন পাহাড়ের খাঁদ বেয়ে উড়ে উড়ে দৌঁড়ে গিয়েছিলেন তখন দুজনকেই কালো ওয়্যার বা পর্দা দিয়ে শুন্যে ভাসিয়ে ভাসিয়ে বাহুবলির দৃশ্যগুলি তৈরি করা হয়েছিল।পিছনে ছিল গ্রীন বা সবুজ স্ক্রীন যা মুছে ঐ জায়গায় অন্য দৃশ্য এড করা হয়েছিল।
সাম্প্রতিক এক জনপ্রিয় ছবি "পুষ্পা" তেও ভিএফএক্স এর ব্যবহার করা হয়েছিল ।এই ছবিতে অল্লু অর্জুনকে পুস্পাতে পরিণত করার জন্য অনেক মেকআপের প্রয়োজন হয়েছিল। মুখের ডান পাশের ছোট্ট একটা তিল আর মুখের বাম পাশের কাটা দাগ সুক্ষ্ণভাবে মেকআপ করা হয়েছিল।
"পুষ্পা" ছবিতে চন্দন কাঠ ভর্তি যে ট্রাকটি কুয়ায় ফেলে দেয়া হয়েছিল বাস্তবে সেখানে কোন ট্রাক ছিল না। সেখানে লড়ির দরজার মত একটা ফ্লাইভ বোর্ড ছিল যা কিনা নিচ থেকে কয়েকজন লোক ঠেলে নিয়ে যাচ্ছিল।পরে ওটাকে ভিএফএক্স এর মাধ্যমে রঙিন লড়িতে রূপ দেওয়া হয়েছিল।
বিশ্ব বিখ্যাত হলিউড মুভি "টাইটানিক" ছবিতেও ভিএফএক্স এর ব্যবহার করা হয়েছে।সৌন্দর্য ও আকর্ষণীয় করার জন্য কলা-কুশলীদের কতই না কলা-কৌশল ।তাঁদের এই অক্লান্ত পরিশ্রম আমাদের বৃথা দেওয়া উচিত নয়। তাঁদের ন্যায্য মূল্য আমাদের দর্শকদের আন্তরিক ও হৃদ্যতার সাথে গ্রহন করা উচিত।নইলে চলচ্চিত্র সমাজ পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাবে।