বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু আকাশচুম্বী বুর্জ খলিফা সম্পর্কে অজানা তথ্য

বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু আকাশচুম্বী বুর্জ খলিফা সম্পর্কে অজানা তথ্য

দুবাই বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত এবং ধনী শহর। সংযুক্ত আরব আমিরাতের এই আধুনিক শহরটি নানা কারণে বিখ্যাত। প্রধানটি হল বুর্জ খলিফা। যা বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন। এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা মানুষের তৈরি কাঠামোও বলা হয়।

জেনে রাখুন⇨দুবাইতে বুর্জ খলিফার কাছে ৩৫ তলা ভবনে আগুন লেগেছিল 

আমরা সবাই এটা জানি কিন্তু বুর্জ খলিফা সম্পর্কে কিছু তথ্য আছে যা এখনো আমাদের অনেকের কাছেই অজানা। আজ আমি বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু আকাশচুম্বী বুর্জ খলিফা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দেব।

বুর্জ খলিফা নির্মাণ শুরু হয় ২০০৪ সালে এবং এটি ২০১০ সালে তৈরির কাজ শেষ হয়। এটি তৈরি করতে ৬ বছর সময় লাগে। ২০০৩ সালে EMAAR সম্পত্তির মালিক মোঃ আলী আলব্বার এটি নির্মাণের প্রস্তাব করেন। এটি তৈরি করতে ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ১১৪ আরব রূপি, যা বাংলাদেশি টাকায় ১০,০০০ কোটি খরচ হয়।
*বুর্জ খলিফা সম্পর্কে আরো প্রয়োজনীয় তথ্য
১।পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু নির্মাণ।
২।এর সংগে সবচেয়ে বেশি ফ্লোরের বিল্ডিং।
৩।সবচেয়ে উচ্চতম ফ্লোর।
৪।পৃথিবীর অধিক শহর প্রদর্শন কেন্দ্র ৪৮ তম ফ্লোর অবস্থিত।
৫।১৪৪ তম ফ্লোরে পৃথিবীর উচ্চতম নাইট ক্লাব অবস্থিত।
৬।১২২ তম ফ্লোরে পৃথিবীর উচ্চতম রেষ্টুরেন্ট অবস্থিত।
৭।১৫৮ তম ফ্লোরে পৃথিবীর উচ্চতম মসজিদ অবস্থিত।
৮।এতে ৩,০০০ টি পার্কিং স্পেস,৩০০টি হোটেল,৯০০ টি এপার্টমেন্ট  ও ৩৭ টি অফিস স্পেস আছে।
৯।এর চারদিক কৃত্রিম ঝিল দ্বারা ঘেরা।
১০।এতে ৫৭ এলিভেটর বা লিফট আছে।এই লিপ্টের গতিবেগ ঘন্টায় ৪০ মাইল বা সেকেন্ডে ৩৩ ফুট।
১১।গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে টপ ফ্লোরে যেতে মাত্র ১ মিনিট সময় লাগে।
১২।পুরো বিল্ডিং এ ১৭,০০০ টি দরজা,২৪,৩৪৮টি জানালা আছে।
১৩।এ বিল্ডিং এ ৯,৮৬,০০০০ টন দৈনিক জলের প্রয়োজন হয়।
১৪।এতে প্রতিদিন সাড়ে তিন মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হয় যা ৩,০০০ বাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবে।
১৫।বুর্জ খলিফা ৩৫,০০০ লোকের ধারণ ক্ষমতা রাখে।

দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানি স্যামসাং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশনকে এটি নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কোম্পানিটি আগে চীনে তাইপেই ১০১ তলা এবং নিউ ইয়র্কে টুইন টাওয়ার তৈরি করেছিল।আপনারা জেনে রাখুন যে, বুর্জ খলিফার আগে, তাইপেই ১০১ তলা ছিল বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন।
পূর্বে বুর্জ খলিফার নাম ছিল বুর্জ দুবাই। কিন্তু সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট এবং আবুধাবির শাসক শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সম্মানে এর নাম পরিবর্তন করে বুর্জ খলিফা রাখা হয়।


১৬৩ তলা বুর্জ খলিফা নির্মাণে সময় লেগেছে ৬ বছর। আর এই ৬ বছরে এখানে প্রতিদিন ১২ হাজার শ্রমিক দিনরাত কাজ করে।


এটি নির্মাণে ১০,০০০মেট্রিক টন কংক্রিট এবং৩৯,০০০টন ইস্পাত আর ২৪,০০০ গ্লাস প্যানেলস ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে ব্যবহৃত অ্যালুমিনিয়াম ফ্রেমের পরিমাণ ৫টি A 380 এয়ার বাস বিমান বা ৩৫টি A 380 AIRCRAFT এর সাথে তুলনা করা যেতে পারে।


বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন বুর্জ খলিফা। এর উচ্চতা ৮২৮ মিটার বা ২,৭১৭ফুট। এটি আইফেল টাওয়ারের চেয়ে ৩ গুণ লম্বা এবং এম্পায়ার স্টেট ভবনের চেয়ে ২গুণ লম্বা। এটি এত লম্বা যে এর শীর্ষটি১০০ কিলোমিটার দূর থেকে দেখা যায়।এতে ১৬৩ তলা আছে. ওপরের তলা থেকে প্রতিবেশী দেশ ইরাক দেখা যায়।

বুর্জ খলিফার উপরের তলায় ২ মিনিটের বেশি সময় ধরে সূর্য দেখা যায়, তাই ৮০ তম তলার উপরে থাকা লোকদের রমজান মাসে ২ মিনিট বেশি রোজা রাখতে হয়। বুর্জ খলিফার উপরের তলায় তাপমাত্রা সর্বদা নিচতলার তুলনায় ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম থাকে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url